সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫, ০৮:৪৫ অপরাহ্ন
একুশের কণ্ঠ ডেস্ক:: গরমের মতো শীতে সহজে গ্যাস-অম্বলের ভয় থাকে না বলে খাওয়া-দাওয়ায় কড়া নিয়ম মেনে চলেন না অনেকেই। এই সময়ে বিভিন্ন উৎসবে হরেক রকম খাবার খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।
এই যেমন বিয়ে বাড়িতে একটা ফিশফ্রাইয়ের বদলে দুটি খেয়ে নেন। সোয়েটার পরে হলেও আইসক্রীম খাওয়া চাই। শীতকালে সাধারণত শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম থাকে। সে জন্য চিকিৎসকরা ভালো করে খাওয়া-দাওয়া করার কথা বলেন।
এছাড়া যে কোনো গেঁটে বাত বাড়ে এই শীতকালেই। তাই ঠান্ডায় সুস্থ থাকতে ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। পাশাপাশি জোর দিতে হবে প্রতিদিনের ডায়েটে। খাবার আর পানীয় যদি শরীর ঠিকভাবে না পায় তাহলে সমস্যা বাড়বেই।
শীতে এমন কিছু খাবার থাকে যা রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো শীতকালে খেলে সমস্যা হিতে বিপরীত হতে পারে। তাই শীতকালে সুস্থ থাকতে চাইলে কয়েকটি খাবার থেকে দূরে থাকাই ভালো।
দই, ঘোল, লাচ্ছি
শরীর ঠান্ডা রাখে বলে গরমকালে এই পানীয়গুলোর কদর থাকে আলাদা। কিন্তু শীতকালে তাপমাত্রা এমনিতে কম। ফলে আলাদা করে শরীর ঠান্ডা রাখার তেমন কোনো প্রয়োজন পড়ে না। শীতকালে এই ধরনের দুগ্ধজাতীয় খাবার এবং পানীয় খেলে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। দই শরীরের জন্য ভালো হলেও ঠান্ডা লাগার ধাত থাকলে শীতকালে যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।
বিয়ার ও ওয়াইন
শীত মানেই পার্টি উৎসব লেগেই থাকে। ফলে বিয়ার, ওয়াইন খাওয়ার পরিমাণও বাড়ে। এই সব পানীয়ের মধ্যে পিউরিনের পরিমাণ থাকে বেশি। তাই প্রতিদিন খেলে বাড়বে ইউরিক অ্যাসিডও।
কেক-মিষ্টি
পুষ্টিবিদদের মতে, শীতকালে দেদার কেক, মিষ্টি খাওয়ার অভ্যাসে প্রতিরোধশক্তি কমে যেতে পারে। ফলে সংক্রমণের সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা হারাবে শরীর। কোল্ড ড্রিঙ্ক ছাড়াও ফ্রুট জুস, মিষ্টি ড্রিঙ্ক এবং গ্য়াস দিয়ে তৈরি ড্রিঙ্ক না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন পুষ্টিবিদরা। এর মধ্যে চিনির পরিমাণ বেশি থাকে। যা ইনসুলিস রেজিস্ট্যান্স বাড়িয়ে তোলে।
সালাদ ও র ফুড
শীতের বিকালে সালাদ এবং র ফুড না খাওয়াই ভালো। এগুলো পেটে ব্যথা এবং অ্যাসিডিটি বাড়িয়ে দিতে পারে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, শীতের সময় দুপুরে পাচনতন্ত্র সব থেকে ভালো কাজ করে।
কফি
শীতকালে বেশি ক্যাফিনজাতীয় কফি খেলে সমস্যা হতে পারে বলেই মনে করছেন পুষ্টিবিদরা। কারণ এই সময়ে পানি পান করার প্রবণতা এমনিতে কমে যায়। তার উপর বেশি কফি গেলে শরীর আর্দ্রতা হারাতে শুরু করবে। গলা শুকিয়ে যাওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা তৈরি হবে।
ভাজাভুজি
শীতকালে ভাজাভুজি জাতীয় খাবার বেশি খেলে ওজন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। শীতকালে এমনিতেই শরীরচর্চার অভ্যাস অনেকটা কমে যায়। তার উপর এই ধরনের খাবার বেশি খেলে ওজন বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্যাস-অম্বলের সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
মাংস ও সামুদ্রিক মাছ
যাদের ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা রয়েছে তাদের মাংস, সামুদ্রিক মাছ খাওয়া অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত। এই সামুদ্রিক মাছের মধ্যে পিউরিন বেশি পরিমাণে থাকে। তাই মাংস খেলেও ছোট মুরগি খেতে হবে। রেড মিট একেবারেই চলবে না।
হিস্টামিন সমৃদ্ধ খাবার
শীতে হিস্টামিন সমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে চলা ভালো। কারণ হিস্টামিন হলো ইমিউন সিস্টেমের তৈরি একটি যৌগ, যা জ্বলন্ত সংবেদন তৈরির সময় অ্যালার্জির মতো অযাচিত জিনিসগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করে।
হিস্টামিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন- ডিম, মাশরুম, টমেটো, শুকনো ফল এবং দই অন্যান্য খাবার চেয়ে বেশি ক্লেশ তৈরি করে। এটি অনুনাসিক ভিড় বা বুকের কফ নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
যেসব খাবার উপকারী
কনকনে শীতে শরীর চাঙা রাখতে অত্যন্ত উপকারী ও উপাদেয় স্যুপ খেতে পারেন। শীতকালে ভিটামিন সি জাতীয় খাবার শরীরের জন্য অত্যন্ত জরুরি। শীতের সময় বেশি বেশি লেবু, পেয়ারা, কমলা ও নেক্টারের মতো ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন।
শীতকালে সুস্থ থাকার জন্য ঘি, মধু, পালং শাক খাওয়ার চেষ্টা করুন। এছাড়া গাজর, মুলা, বিট ও শালগমের মতো মূলজাতীয় সবজি শীতকালীন খাবার হিসেবে আদর্শ। এগুলো শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরল বাড়াতে কাজ করে।